নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুরে নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। মিল-কারখানা অধ্যুষিত বিশাল এই ইউনিয়ন বরাবরই থেকেছে আলোচনার তুঙ্গে। নির্বাচন সমাগত হওয়ায় জনসাধারণও নানা হিসেব-নিকেশ মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বসে নেই প্রার্থীরাও। তাঁরাও নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের ছক কষে ফেলার পাশাপাশি ভোটযুদ্ধে সামিল হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সবমিলিয়ে কুতুবপুরে নির্বাচনী দামামা যে কিছুদিনের মধ্যেই বাজতে শুরু করবে, তার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে ভালোভাবেই।
আন্দোলন-সংগ্রামে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কুতুবপুর। নেতাকর্মী-সমর্থকের দিক দিয়েও আওয়ামী লীগ এখানে বেশ শক্তিশালী অবস্থানে আছে। তবে গত নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীর পরাজয়ের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে দলটি এবার সচেষ্ট বলে জানা যায়। দলের প্রতি একনিষ্ঠ আনুগত্য ও ভালোবাসা থেকেই নৌকার জয় তারা নিশ্চিত করবেন বলে মনে করেন মাঠপর্যায়ের কর্মীরা। দলীয় প্রতীকের প্রতি আস্থার প্রমাণ তারা ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনেও দিয়েছেন।
অন্যদিকে বিএনপির একসময়ের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কুতুবপুরে বর্তমানে দলটির ত্রাহি অবস্থা। এমনকি গত নির্বাচনে দেশের অন্যতম প্রধান এই দলটির কোনো প্রার্থী ছিল না। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ রয়েছে কর্মীদের মধ্যে। অনেক তরুণ নেতাই চাচ্ছেন দলটির হাল ধরতে। তারা বলছেন, জয়-পরাজয় যা-ই হোক, আন্দোলনের অংশ হিসেবে যে কোনো মূল্যে দলীয় প্রার্থী মাঠে চাই।
কুতুবপুরের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি (বর্তমানে বহিষ্কৃত) আলহাজ্ব মনিরুল আলম সেন্টু এবারের নির্বাচনেও অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে অসমর্থিত সূত্রে জানা যায়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব শিকদার মোঃ গোলাম রসুল, থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এইচএম ইসহাক, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মোঃ জসিম উদ্দিন, সাবেক ২ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নাম শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেকের নামও উচ্চারিত হচ্ছিলো, কিন্তু সম্প্রতি তার কর্মী-সমর্থকেরা তাকে ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করছেন।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়াও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রভাব রয়েছে এই ইউনিয়নে। এদের মধ্যে কুতুবপুর ইউনিয়ন নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব, সাবেক ছাত্রনেতা এস এম কাদির এবারও প্রার্থী হচ্ছেন বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়। তবে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের গতবারের প্রার্থী এবার নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী নন বলে সূত্র নিশিচত করেছে।