জিনজিয়ান প্রদেশে হাজার হাজার মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এএসপিআই। শুক্রবারের এক প্রতিবেদনে ওই অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তৃত তথ্য প্রমাণও তুলে ধরা হয়।
মানাবধিকার সংস্থাগুলো বলছে, জিনজিয়ানের বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে অন্তত ১০ লাখ মানুষকে আটকে রেখেছে চীনা সরকার। এদের অধিকাংশই উইঘুর মুসলমান এবং তুর্কিভাষী বাসিন্দা। তাদেরকে জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করার পাশাপাশি নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ধর্ম চর্চা ত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে।
এএসপিআই প্রতিবেদনে বলা হয়, কমপক্ষে ১৬ হাজার মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে চীন। স্যাটেলাইটে মসিজিদের ধ্বংসাবশেষের ছবি, তথ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উরুমকি এবং কাশগারে সবচেয়ে বেশি মসজিদ ধ্বংস হয়। ৮ হাজার ৫০০ মসজিদ সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।যেসব মসজিদ ধ্বংস করা হয়নি সেসব মসজিদের মিনার ও গম্বুজ গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে ।
১৯৬০ সালে দেশটিতে সংস্কৃতি বিপ্লব শুরু হয়ে চলে কয়েক দশক। পূর্বে জিনজিয়ানে যে পরিমাণ মসজিদ ছিল বর্তমান সংখ্যা তার থেকে অনেক কম। তবে জিনজিয়ানে খ্রিস্টনদের চার্চ এবং বৌদ্ধদের মন্দিরের বিষয়ে প্রতিবেদনে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে চীন জোর দিয়ে বলেছে, জিয়ানজিয়ানের বাসিন্দারা পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করছে। এএসপিআই’র গবেষণা সম্পর্কে শুক্রবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করা হলে তারা জানায়, ওই গবেষণার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক গ্রহণযোগ্যতা নেই। চীনের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, জিনজিয়ানে মসজিদ রয়েছে ২৪ হাজার। জিনজিয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের থেকেও মসজিদ রয়েছে ১০ গুণ বেশি। গড়ে জনপ্রতি মসুলমানের জন্য চীনে যে পরিমাণ মসজিদ রয়েছে তা কোনো কোনো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশেও নেই।
এদিকে এএসপিআই জানায়, জিনজিয়ানে তারা ৩৮০ আটক কেন্দ্র চিহ্নিত করেছে। আটক কেন্দ্রের সংখ্যা ধারাণার চেয়েও অনেক বেশি এবং সেগুলো দ্রুত প্রসারিত করা হচ্ছে। তবে এই বিষয়ে চীন বলছে, আটক কেন্দ্র নয়, সেগুলো পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র। সেখানে উগ্রবাদ মোকাবিলায় তাদের দেয়া প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলেও দাবি বেইজিংয়ের।