নির্বাচন আর উৎসবের বেশ ভালো একটি যোগসূত্র রয়েছে বাংলাদেশে। বিশেষত স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে জেগে ওঠে পাড়া-মহল্লাগুলোও। তবে উৎসব ছাপিয়ে নির্বাচনের সঙ্গে যে জনসাধারণের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে, তা অনস্বীকার্য। প্রার্থীদের ভালো-মন্দ দেখেই রায় দিতে হয় তাঁদের। কিন্তু কুতুবপুরে যেন ভিন্ন চিত্র। এখানে নির্বাচন উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে বিনোদনের।
কাগজে-কলমে নির্বাচনের বাকি রয়েছে দুই থেকে তিন মাস। কিন্তু কুতুবপুরে প্রার্থীদের প্রচারণা শুরু হয়েছে ঢের আগেই। এসবকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া যেতো, যদি সত্যিকারের প্রার্থীরা মাঠে নামতেন। অথচ অযোগ্য, অথর্ব প্রার্থীদের আনাগোনা হতাশ করে তুলেছে নাগরিকদের। ইউপি সদস্য পদে এখন পর্যন্ত প্রতি ওয়ার্ডে কমবেশি বিশজন করে প্রার্থীর দেখা মিলেছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই সংখ্যা যে আরো বাড়বে, তাতে সন্দেহ নেই।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেকেউ প্রার্থী হতে পারেন, একথা সত্য। তবে সবাই কিন্তু প্রার্থী হন না। অথচ কুতুবপুরে যেন সবাই প্রার্থী! তালিকায় রয়েছেন মাদক ব্যবসায়ী, ইয়াবা আসক্ত, চালচোর, চাটুকার, ধান্ধাবাজ থেকে শুরু করে নানারকমের লোকেরা। ভুল বানানে, হাস্যকর নিউজ, ব্যানার করিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন তাঁরা।
আশঙ্কার কথা হচ্ছে, এসব প্রার্থীদের ভিড়ে সমাজের শিক্ষিত,রুচিশীল,গ্রহণযোগ্য লোকেরা নির্বাচনে অংশ নিতে অনীহা প্রকাশ করছেন। শিক্ষক,আইনজীবি, প্রকৌশলী, সংস্কৃতিকর্মী, রাজনৈতিক কর্মী, চিকিৎসকেরা বরং নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় থেকে নিজেদের দূরে রাখছেন।
ফলে অযোগ্যদের দখলে মাঠ। যথেষ্ট উদ্বেগের এই বিষয়গুলো নিয়ে নেটিজেনরাও মজা করতে ছাড়ছেন না।
তাঁরা মানসিকভাবে অসুস্থ লোকেদের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করাচ্ছেন সবার সামনে। এরকম প্রতিবাদ ভিন্নতা যোগ করেছে এবারের নির্বাচনে।
তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, শেষমেষ অযোগ্যদের হাতেই যাবে দায়িত্ব। তেমনটি যেন না হয়, কায়মনে সেটিই প্রার্থনা করি।